১৫ বছর পর নিখোঁজ মেয়েকে ফিরে পেলেন বাবা - মা

5th October 2020 10:58 pm বর্ধমান
১৫ বছর পর নিখোঁজ মেয়েকে ফিরে পেলেন বাবা - মা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( কালনা ) :  প্রায় পনেরো বছর পর নিখোঁজ মেয়েকে ফিরে পেলেন তার বাবা-মা।পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানা ও দিল্লী থানা  পুলিশের সহযোগিতায় এইরকমই এক মানবিক ঘটনায় আনন্দের রেশ মন্তেশ্বরের পানবড়েয়া গ্রামে।স্বাভাবিক কারণেই উচ্ছাস গ্রামবাসীদের মনেও।
                    স্থানীয় ও পুলিশসূত্রে জানা যায় যে,প্রায় বছর পনেরো আগে ভিন রাজ্য থেকে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর এলাকায় কাজ করতে আসা এক যুবককে মন্তেশ্বরের পানবড়েয়া গ্রামের যুবতী মুনমুন বাগ প্রেম ভালোবাসা করে বিয়ে করে।এরপরেই ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে সে পাড়ি দেয় বিহার রাজ্যে থাকা শ্বশুরবাড়ি  উদ্দেশ্যে।মন্তেশ্বরের বাপের বাড়ির সঙ্গে কয়েকবছর তার যোগাযোগ থাকলেও পরে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।এরপর মুনমুন নিখোঁজ হয়ে যায়।তার বাবা কুশ বাগ ও মা বিজলী বাগ অনেক চেষ্টা করেও মেয়ের আর কোনো খোঁজ পায়নি।স্বাভাবিক কারণেই মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশাও তারা ছেড়ে দেয়।মনের কষ্ট মনেতেই থেকে যায় তাদের।নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে বাবা কুশ বাগের শরীরও ভেঙ্গে পড়ে।দেড় দশকের বেশী সময় ধরে চলতে থাকা সেই যন্ত্রণা ভোগের মধ্যেই গত ছয়-সাত মাস আগে দিল্লী থেকে একটি ফোন মারফৎ হঠাৎই মেয়ের খোঁজ আসে।ফিরে পাওয়ার ক্ষীণ আশা তৈরী হয়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে দিল্লী পুলিশ মন্তেশ্বর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে।মন্তেশ্বর পুলিশ ওই পরিবারের সঙ্গে  দিল্লী পুলিশের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়।হোয়াটস অ্যাপ ও ভিডিও কলিংয়ে মেয়ে ও তার বাবা মা একে অপরকে চিনতেও পারে।কিন্তু মেয়েকে যে সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ে চলে আসবে সেখানেও বড়ো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ ও আদালতের অনুমতি।শেষপর্যন্ত মন্তেশ্বর ও দিল্লীর শ্রীনগর থানা পুলিশের সহযোগিতায় সব বাঁধা কাটিয়ে মুনমুন সোমবার সন্ধ্যায় ফিরে আসে মন্তেশ্বরের বাবা মায়ের কাছে।এরপরেই জানা যায় মুনমুনের সঙ্গে তার স্বামীর কোনো যোগাযোগই নেই।বিয়ের পরে তাকে দিল্লীও নিয়ে যাওয়া হয়।এরপরেই সেখানে সে কোনোভাবে হারিয়ে যায়।এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উদ্ধার করে আলফাবাগের সদন হোমে মুনমুনকে রাখে।কথাবার্তায় ও আচরণে অসংলগ্নতা থাকলেও কথাবার্তার মাধ্যমে মুনমুন জানায় যে তার বাড়ি মালম্বার কাছাকাছি কোনো এক জায়গায়।এরপরেই দিল্লী পুলিশ সেই খোঁজ চালায়।পেয়ে যায় তার বাড়ির ঠিকানা।সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লী পুলিশ মুনমুনকে মন্তেশ্বর থানায় নিয়ে আসে ও বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয়।সন্তান হারানোর বেদনায় যন্ত্রণাক্লিষ্ট বাবা মা মেয়েকে বুকে পেয়ে চোখের জলের বাঁধ ভেঙ্গে যায়।এই বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন,‘দিল্লী পুলিশ ওখানকার হোমে থাকা একটি মেয়েকে তার বাবা মায়ের হাতে এইদিন তুলে দেন।“





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।